Ielts কি?

IELTS এর পূর্ণরূপ হলো International English Language Testing System। ১৯৮৯ সালে IELTS যাত্রা শুরু করে এবং পরবর্তীতে বিশ্বব্যাপী জনপ্রিয়তা লাভ করে।

IELTS হলো আন্তর্জাতিক মানের একটি পরীক্ষা এবং এই পরীক্ষার মাধ্যমে আপনার ইংরেজিতে কতটুকু দখল ও দক্ষতা রয়েছে সেটি যাচাই-বাছাই ও পরীক্ষা করা হয়। সাধারণত যারা উচ্চশিক্ষার জন্য বিদেশে (বিদেশ বলতে সব দেশ নয়, ইংরেজি ভাষাভাষীর দেশগুলো) গমনকারী শিক্ষার্থীরা এবং ইমিগ্রেশন, জব, ট্রেনিং, ব্যবসার উদ্দেশ্যে বিদেশে যেতে চাইলে IELTS সার্টিফিকেট প্রয়োজন।  সমগ্র বিশ্বব্যাপী British Council, IDP: IELTS Australia এবং Cambridge English Language Assessment এর অধীনে IELTS পরীক্ষা হয়।

আইইএলটিএস (IELTS) টেস্টকে দুই ভাগে ভাগ করা যায়-
১. একাডেমিক আইইএলটিএস।
২. জেনারেল ট্রেনিং আইইএলটিএস।

Ielts প্রয়োগঃ-

  • উচ্চশিক্ষা (অনার্স, মাস্টার্স, পিএইচডি)  গ্রহণের উদ্দেশ্যে। 
  • আমেরিকা, অস্ট্রেলিয়া, জার্মানি, কানাডাসহ বিভিন্ন দেশের বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার উদ্দেশ্যে।
  •  বিদেশে কোনো চাকরি পেলে, সেখানে বসবাসের উদ্দেশ্যে। 
  • ইংরেজি ভাষায় নিজেকে দক্ষ করার উদ্দেশ্য।

আবার এই টেস্ট দুটির ৪টি ভাগ রয়েছে। যথা:

১. লিসেনিং: লিসেনিং এর জন্য আপনাকে ৩০ মিনিট সময় দেওয়া হবে। আপনাকে ৩০ মিনিটের অডিও ভিত্তিক এই পরীক্ষায় ৪টি ভাগে ১০টি করে মোট ৪০টি প্রশ্নের উত্তর দিতে হবে। প্রতিটির নির্ণারিত মান ১ এই ভিত্তিতে সঠিক উত্তরের উপর নির্ভর করে ব্যান্ড স্কোর দেওয়া হয়। লিসেনিং আপনার কথোপকথন বোঝার দক্ষতা যাচাই মূলক পরীক্ষা। ৩০ মিনিটের এই ৪টি রেকর্ডটি আপনার মাত্র একবার শোনার সুযোগ থাকবে। এটি শোনার পর কিছু প্রশ্ন করা হবে ও কিছু প্রশ্ন উত্তরপত্রে লিখতে হবে। তাই আপনাকে এই পরীক্ষার সময় খুব মনোযোগী হতে হবে।

২. রিডিং: রিডিং টেস্টের জন্য আপনাকে ১ ঘন্টা সময় দেওয়া হবে ও ৩টি অনুচ্ছেদ থেকে ৪০টি প্রশ্নের উত্তর দিতে হবে। রিডিং টেস্টের মাধ্যমে আপনার পড়ার দক্ষতা যাচাই করা হয়। টেস্টের অনুচ্ছেদ থেকে বাক্য পূরণ, সংক্ষিপ্ত উত্তর, সঠিক উত্তর খুঁজে বের করতে হয়। একাডেমিক টেস্টের অনুচ্ছেদগুলো বেশ বড় এবং এগুলো সংবাদপত্র, বই, ম্যাগাজিন থেকে নেওয়া হতে পারে যা থেকে প্রশ্নের উত্তর খুঁজে বের করা হয়। এগুলো সাধারণত গবেষণা ও বিজ্ঞান বিষয়ক লেখা।

একাডেমিক টেস্টের চেয়ে জেনারেল টেস্ট তুলনামূলক সহজ। দৈনন্দিন জীবনে মুখোমুখি হতে হয় এমন বিষয় নিয়ে এই টেস্ট হয়। সংবাদপত্র, বই, বিজ্ঞাপন, হ্যান্ডআউট, ম্যাগাজিন থেকে অনুচ্ছেদ তুলে দেওয়া হয়।

৩. রাইটিং: রাইটিং অংশ হচ্ছে সম্পূর্ণ পরীক্ষার সবচেয়ে কঠিন অংশ। তবে এটি সহজ না কঠিন তা নির্ভর করে আপনার প্রস্তুতি ও দক্ষতার উপর। টেস্টে আপনার ইংরেজি লেখার দক্ষতা যাচাই করা হয়। এক্ষেত্রে আপনাকে যথেষ্ট সৃজনশীল হতে হবে। এই টেস্টে ১ঘন্টা সময়ের মধ্যে আপনাকে দুইটি প্রশ্নের উত্তর দিতে হবে। প্রথম অংশে একটি গ্রাফ, ডায়াগ্রাম, চার্ট, বা ম্যাপ দেওয়া থাকে যেটি নিজের ভাষায় বিশ্লেষণ করতে হয়। পরের অংশে একটি মতামত থাকবে সেটির পক্ষে-বিপক্ষে যুক্তি উপস্থাপন করতে হবে। তবে প্রথম অংশের চেয়ে দ্বিতীয় অংশে বেশি নাম্বার থাকে এবং সময়ও বেশি দিতে হয়।

একাডেমিক টেস্ট ও জেনারেল টেস্টে কিছুটা পার্থক্য আছে। জেনারেল টেস্টে প্রথম প্রশ্নে গ্রাফ, ডায়াগ্রাম, চার্ট বা ম্যাপের পরিবর্তে ফরমাল বা পারসোনাল লেটার লিখতে দেওয়া হয়।

৪. স্পিকিং: ইংরেজিতে আপনি কতটা গুছিয়ে, সুন্দর করে ও সাবলীলভাবে কথা বলতে পারেন সেই দক্ষতা যাচাই করা হয় স্পিকিং টেস্টের মাধ্যমে। পরীক্ষার্থীদের ১১ থেকে ১৪ মিনিটের পরীক্ষা দিতে হয়। প্রথম অংশে কিছু সাধারণ প্রশ্ন করা হয় যেমন: পরিবার, পড়াশোনা, কাজ, শখ ইত্যাদি নিয়ে। দ্বিতীয় অংশে একটি নির্দিষ্ট বিষয়ে ২ মিনিট কথা বলতে হয়। তৃতীয় অংশে কোনো নির্দিষ্ট বিষয়ে পরীক্ষকের সঙ্গে ৪-৫ মিনিট কথোপকথন করতে হয় বা প্রশ্ন-উত্তর চলে।

ELTS প্রস্তুতির বই

IELTS পরীক্ষার জন্য বাজারে অনেক বই রয়েছে। এক্ষেত্রে আপনাকে কিছু বই সংগ্রহ করতে হবে এবং কিছু বইয়ের পিডিএফ ডাউনলোড করে নিতে পারেন। IELTS পরীক্ষার প্রস্তুতির জন্য উল্লেখযোগ্য বইসমূহ হলো-

  • The Official Cambridge Guide (7-17)
  • Cambridge Vocabulary for IELTS with answers
  • TOEFL by Cliffs
  • Common Mistakes in English (English version)
  • Common Mistakes At IELTS Intermediate + Advanced Book
  • Practical English Usage by Michael Swan
  • IELTS Practice Tests Plus
  • Reading Skills 
  • How To Get 7+ In IELTS Reading 

আইইএলটিএস পরীক্ষা কখন হয়

সারা বছরে অন্তত ৪৮টি পরীক্ষার দিন নির্ধারিত  করা হয়ে থাকে। দেশের বিভিন্ন ভেন্যুতে প্রতি মাসে অন্তত ৩ থেকে ৪টি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। অর্থাৎ পরীক্ষা দিতে আপনাকে দীর্ঘ সময়ের জন্য অপেক্ষা করতে হবে না। 

IELTS এর রেজিস্ট্রেশন পদ্ধতি খরচ

IELTS এর জন্য আপনাকে ব্রিটিশ কাউন্সিল ও আইডিপি এর অধীনে থেকে পরীক্ষা দিতে হবে। এই দুই প্রতিষ্ঠানের অধীনে ঢাকা, চট্টগ্রাম, রাজশাহী, খুলনা বরিশাল, সিলেট, কুমিল্লা জেলার অধীনে পরীক্ষার সেন্টার রয়েছে।

আপনি অনলাইন বা টেস্ট সেন্টারে গিয়ে দুইভাবে রেজিস্ট্রেশন করতে পারেন। রেজিস্ট্রেশন সংক্রান্ত সকল নির্দেশনা অনলাইনেই পাবেন। রেজিস্ট্রেশনের জন্য যা যা করবেন-

  • রেজিস্ট্রেশনের জন্য আপনার অবশ্যই পাসপোর্ট থাকতে হবে। 
  • সদ্য তোলা পাসপোর্ট সাইজের ২কপি ছবি। এক্ষেত্রে ৬মাস আগের ছবি ব্যবহার করবেন না। ছবি তোলার সময় চশমা ব্যবহার করবেন না।
  • আপনার আইইএলটিএস স্কোরটি যদি কোনো বিশ্ববিদ্যালয় বা কলেজে পাঠাতে চান তাহলে এপ্লিকেশন ফর্মে সেই বিশ্ববিদ্যালয় বা কলেজের নাম নির্দিষ্ট করে উল্লেখ করতে হবে।
  • অফলাইনে আবেদন করলে নির্দিষ্ট সেন্টারে গিয়ে রেজিস্ট্রেশন ফর্ম নির্ধারিত ফি সহ জমা দিতে হবে। 
  • অনলাইনে আবেদন করলে সকল কাজ অনলাইনে করতে পারবেন। আর ফি জমা দানের ক্ষেত্রে আপনার নির্ধারিত সেন্টারে গিয়ে বা কার্ডের মাধ্যমে প্রদান করতে পারেন। 

IELTS রেজিস্ট্রেশন ফি ২০০ ডলার। অর্থাৎ বাংলাদেশী টাকা অনুসারে ১৭০০০-১৮০০০ টাকার মত। ডলারের মানের উপর ভিত্তি করে এটি কম বেশি হতে পারে।

IELTS পরীক্ষা কেন্দ্রে যেসকল জিনিস নিতে পারবেন

  • আপনার পাসপোর্ট। অবশ্যই মেয়াদ থাকতে হবে।
  • কলম, রাবার, শার্পনার নিতে পারবেন।
  • পরীক্ষার হলে মোবাইল ফোন বা অন্যান্য ডিভাইস সাথে রাখা যাবে না।

IELTS পরীক্ষার ফলাফল মেয়াদ

ব্রিটিশ কাউন্সিল বা আইডিপি যেখানেই পরীক্ষা দিন পরীক্ষার ফলাফল তাদের নিজস্ব ওয়েবসাইটেই পাবেন। সাধারণত পেপার বেইসড পরীক্ষার ফলাফল ১৩ দিনে ও কম্পিউটার বেইসড পরীক্ষার ফলাফল ৫ দিনে দেওয়া হয়। ব্রিটিশ কাউন্সিল বা আইডিপির মূল শাখা থেকে টেস্ট রিপোর্ট ফর্ম আনতে পারেন।

আপনি যে ফলাফল করবেন বা স্কোর পাবেন তার মেয়াদ ২বছর। মেয়াদ শেষ হয়ে গেলে আপনাকে আবার পরীক্ষা দিতে হবে।

আইইএলটিএস (IELTS) ব্যান্ড স্কোর হিসাব করা হয় যেভাবে

IELTS স্কোর হলো ৯ অর্থাৎ এই পরীক্ষায় ব্যান্ড স্কোর ৯। চারটি অংশে আলাদাভাবে ব্যান্ড স্কোর দেওয়া হয়। এগুলোর গড় করে সম্পূর্ণ একটি স্কোর দেওয়া হয়। আপনার ইংরেজির লেভেল অনুসারে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করলে আপনাকে ব্যান্ড স্কোর দেওয়া হবে।